
আগামী ১৫ মে’র পর দ্বিতীয় পর্যায়ে ‘ঐকমত্য কমিশন’ আলোচনা
মৌলিক সংস্কারের রূপরেখা দিলো এনসিপি
- আপলোড সময় : ০৭-০৫-২০২৫ ০৫:২৭:০৬ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ০৭-০৫-২০২৫ ০৫:২৭:০৬ অপরাহ্ন


রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কারের একটি রূপরেখা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে এ সংস্কার প্রস্তাব হস্তান্তর করা হয়। এর আগে ১৯ এপ্রিল সংলাপে অংশ নেয় দলটি। এ বিষয়ে এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, মৌলিক সংস্কার বলতে কোনো নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার নয় বা আসন ভিত্তিক দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সংবিধান সংস্কারের মতো বিষয়গুলোকে মনে করি না। বরং ক্ষমতার ভারসাম্য, জবাবদিহিতা ও বিকেন্দ্রীকরণ- এ তিন বিষয়কে অর্জন হচ্ছে মৌলিক সংস্কারের মূল ভিত্তি।
মৌলিক সংস্কারের বিষয়ে তিনি বলেন, সেটাকে অর্জন করতে হলে সাংবিধানিক ও রাষ্ট্র কাঠামো থেকে কীভাবে স্বৈরতান্ত্রিক ও ফ্যাসিবাদী উপাদানগুলো হতে মুক্ত হতে পারি, সাংবিধানিক পদগুলোতে নিয়োগের ক্ষেত্রে দলীয়করণের বাইরে এসে কীভাবে জাতীয় স্বার্থকে প্রতিফলিত করতে পারি, কীভাবে বিচারবিভাগকে রাজনৈতিকভাবে মুক্ত করে সত্যিকার অর্থে ন্যায় বিচারের প্রতীক হিসেবে হাজির করা যায়, প্রত্যেকটি বিষয়কে মৌলিক সংস্কার অন্তর্ভুক্ত বলে আমরা মনে করি। সেই মৌলিক সংস্কারের যে বিষয়ে সংস্কার প্রয়োজন তার রূপরেখা ঐকমত্য কমিশনে জমা দিয়েছি।
তিনি বলেন, আমরা বারংবার বলে এসেছি গত ৫৩ বছরে বাংলাদেশ যে শাসন কাঠামোর মধ্য দিয়ে পরিচালিত হয়েছে এবং রাষ্ট্র কাঠামোর মধ্যে যে স্বৈরতান্ত্রিক উপাদানগুলো থেকে গেছে, ফ্যাসিবাদী উপাদানগুলো থেকে গেছে, তার কারণে বাংলাদেশের জনগণ নিপীড়িত ও নির্যাতিত হয়ে এসেছে। সেই স্বৈরতান্ত্রিক ও ফ্যাসিবাদী কাঠামো থেকে বাংলাদেশের সংবিধান ও রাষ্ট্রকাঠামোকে উত্তরণ ঘটিয়ে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের দিকে কীভাবে শামিল করতে পারি, সেই প্রচেষ্টার জায়গা থেকে বাংলাদেশের আপামর ছাত্রজনতা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে জীবন দিয়েছেন। তাদের আত্মত্যাগ যাতে সার্থক হয়।
আখতার হোসেন বলেন, বাংলাদেশ যেন অতীতের মত ফ্যাসিবাদী ও স্বৈরতন্ত্র কাঠামোর মধ্যে না থেকে গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে নিজেদের শামিল করতে পারে, সেই জায়গায় এনসিপির পক্ষ থেকে মৌলিক সংস্কারের প্রস্তাবনা হাজির করেছি।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে ১৫ মের মধ্যে প্রথম পর্যায়ের আলোচনা শেষ করার চেষ্টা করছি। তারপর দলগুলোর সাথে দ্রুত দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা শুরু করতে চায় কমিশন। তিনি বলেন, ঐকমত্য কমিশনের দেয়া প্রস্তাবগুলোর পাশাপাশি জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকে মৌলিক সংস্কারের যে রূপরেখা প্রদান করা হয়েছে তা আমরা গ্রহণ করলাম। পর্যালোচনা সাপেক্ষে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনায় এই রূপরেখার একটি প্রতিফলন পাওয়া যাবে। তিনি আরও বলেন, আনুষ্ঠানিক এবং অনানুষ্ঠানিকসহ বিভিন্নভাবে কমিশনের আলোচনা অগ্রসর হচ্ছে। এই অব্যাহত আলোচনার মাধ্যমে আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে এমন একটি জাতীয় সনদ তৈরি করা, যা গণতান্ত্রিক এবং জবাবদিহিমূলক ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের পথরেখা নির্দেশ করবে।
আখতার হোসেনের নেতৃত্বে দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার তুষার, জাভেদ রাসিন ও মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় সংলাপে উপস্থিত ছিলেন-কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া।
উল্লেখ্য, গত ২৩ মার্চ জাতীয় নাগরিক পার্টি কমিশন বরাবর তাদের মতামত জমা দেয়। সে প্রেক্ষিতে দলটির সাথে গত ১৯ এপ্রিল প্রথম দিনের আলোচনায় বসে কমিশন। আলোচনা অসমাপ্ত থাকায় আজ দিনব্যাপী বর্ধিত আলোচনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ